নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় মালচিং পদ্ধতিতে হাইব্রিড ‘সুগার কুইন’ জাতের তরমুজ চাষ করে সাফল্য পাচ্ছেন কৃষকেরা। এ পদ্ধতিতে সারাবছরই ফলন মিলছে, বাজারেও রয়েছে দারুণ চাহিদা। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, তরুণ প্রজন্মের সম্পৃক্ততা কৃষিকে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে।
সাধারণত দেশে গ্রীষ্মকালেই তরমুজ পাওয়া যায়। কিন্তু মালচিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেলে দোআঁশ জমিতে এখন বর্ষাকালেও সুগার কুইন জাতের তরমুজ চাষ হচ্ছে। প্রতিটি তরমুজের ওজন ৩–৫ কেজি, আর প্রতি বিঘায় দেড় থেকে ২ হাজার পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাচ্ছে। কম সময়ে (৬৫–৭০ দিন) বাজারজাত করা যায় বলে কৃষকেরা দ্রুত লাভ তুলতে পারছেন।
কেন্দুয়ার পাথারিয়া গ্রামের কলেজ পড়ুয়া সারোয়ার আহমেদ সায়েম ইউটিউব থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে কৃষি অফিসের সহায়তায় এ চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরে ৪০ শতক জমিতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেন তিনি। এ সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে এ বছর ৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন সায়েম।
সায়েমের পথ ধরে প্রতিবেশীসহ অনেকে এ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। তাঁর প্রতিবেশী সুমন মিয়া এবারে ৫০ শতক জমিতে বিষমুক্ত সুগার কুইন জাতের তরমুজ চাষ করে ভালো দাম পাচ্ছেন।
কৃষি কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, রাসায়নিক সার ও বিষমুক্ত চাষে মালচিং প্রযুক্তি খুব কার্যকর। উপজেলার ২ একর জমিতে এ প্রযুক্তিতে চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের নিয়মিত পরামর্শ, বীজ সরবরাহ ও মাঠপর্যায়ের প্রশিক্ষণ কৃষকদের সাফল্যে বড় ভূমিকা রাখছে।
কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, “তরুণরা প্রযুক্তি সহজে গ্রহণ করছে। তাদের আগ্রহের কারণে বেকারত্ব কমবে, নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে। মালচিং পদ্ধতির সফলতা সারা বছর তরমুজ চাষে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।”
এখন প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা পাথারিয়া গ্রামে ভিড় করছেন। কেউ খেত থেকে তাজা তরমুজ খাচ্ছেন, কেউ কিনে নিচ্ছেন। কৃষিপ্রেমী ও উদ্যোক্তারা মাঠ ঘুরে শিখছেন কিভাবে মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করে লাভবান হওয়া যায়।
