একবারের জন্য হলেও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় জামায়াতে ইসলামী
NRD NEWS প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০:৩১, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়েছে। দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ইউরোপীয় পার্লামেন্টের উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি উত্থাপন করেন।
বৈঠকের প্রেক্ষাপট
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দল চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আসন্ন নির্বাচন এবং অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছে। এই বৈঠক শেষে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অংশ নেওয়া ৩১টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৬টি দল ইতোমধ্যেই পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছে। তবে, সংসদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের কাঠামো নিয়ে কিছু মতবিরোধ রয়ে গেছে।
জোরপূর্বক ক্ষমতায় আসার প্রবণতা বদলের আহ্বান
সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি জোরদার করতে হলে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জোরপূর্বক কেন্দ্র দখলের মানসিকতা পরিবর্তন জরুরি। তিনি মনে করেন, আসন্ন নির্বাচন এমনভাবে আয়োজন করতে হবে যাতে জনগণের ভোটের প্রতিফলন ঘটে এবং প্রতিটি রাজনৈতিক শক্তি তাদের প্রকৃত জনসমর্থন অনুযায়ী সংসদে আসন পায়।
ঐকমত্য কমিশন ও সংলাপের গুরুত্ব
ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রশ্নে জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, তারা আশা করছেন আলোচনার মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশা ও রাজনৈতিক দলের মতামত সমন্বিত হবে। তবে এ জন্য প্রয়োজন উদার মানসিকতা ও পারস্পরিক আস্থার পরিবেশ।
তিনি আরও জানান, জামায়াতে ইসলামী মনে করে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি একটি আধুনিক ও ন্যায়সংগত নির্বাচন ব্যবস্থা, যা একবার হলেও প্রয়োগ করলে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্থিতিশীলতা আসবে। তাহের বলেন, “আমরা চাই একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, যেখানে ছোট-বড় সব দলই সমান সুযোগ পাবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পিআর পদ্ধতি চালু হলে বড় রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি ছোট দলগুলিও সংসদে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পাবে। এতে করে একদিকে যেমন রাজনৈতিক বৈচিত্র্য বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে সরকার গঠনে জোট ও সমঝোতার সংস্কৃতি জোরদার হবে। তবে বিরোধীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হতে পারে এবং নির্বাচনী আইন সংশোধনের প্রয়োজন পড়বে।
উপসংহার
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন নানা বিতর্ক চলছে, ঠিক সেই সময়ে জামায়াতে ইসলামী তাদের দাবি নতুন করে জোরালো করল। তারা বলছে, একবারের জন্য হলেও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করা হোক, যাতে জনগণের প্রত্যাশা পূর্ণ হয় এবং একটি অংশগ্রহণমূলক ও ন্যায্য নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যায়।
