এক অসম্ভব ভালোবাসার গল্প – ফোরেনার সুনোর
আজকের সন্ধ্যা ছিল বিশেষ, একেবারে নতুন এক অনুভূতির শুরুর দিন। শহরের ব্যস্ততা কমে আসছিল, আর বাতাসে এক ধরনের শীতলতা ভর করছিল। সুনোর, একজন বিদেশি নাগরিক, যিনি শহরে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে এসেছিলেন, একটু সময় বের করে এক মনোরম রেস্টুরেন্টে এককভাবে বসে ছিলেন। তার চোখের দিকে তাকালে বোঝা যাচ্ছিল, সে কিছুটা চিন্তিত, কিছুটা অস্থির, কারণ সে জানত যে, আজ তার জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হতে চলেছে।
সে একা বসে ছিল, কিন্তু তার মন যেন একেবারে অন্য কোথাও। সুনোরের জীবনের এই মুহূর্তটা ছিল, আসলে, তার জন্য এক অজানা পথে পা বাড়ানোর শুরু। যেখান থেকে, সে আর কখনো ফিরে যাবে না, এমন এক সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে।
অচিরেই রেস্টুরেন্টের দরজা খুলে এক ব্যক্তি প্রবেশ করল। তার নাম ছিল অর্ণব, একজন বাংলাদেশের নাগরিক, একজন উদ্যোক্তা, যার ব্যক্তিত্ব ছিল তার চেয়ে বড়। অর্ণব আর সুনোর আগে একে অপরকে জানতেন না, তবে আজকের এই দিনটিই ছিল তাদের প্রথম দেখা। অর্ণবের চোখে একটি বিশেষ আলোকিত ভাব ছিল, যেন সে জানত যে, আজকের দিনটি তার জীবনের জন্য এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।
অর্ণব, সুনোরের সামনে গিয়ে একটি মৃদু হাসি দিয়ে বলল, “আপনি কি একা বসে আছেন? আপনি যদি অনুমতি দেন, তবে কি আপনার সঙ্গে কিছু সময় কাটানো যাবে?”
সুনোর একটু অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে বলল, “আমি কি জানি না, আপনি কোথা থেকে এসেছেন, তবে আমার মনে হয় আজকের দিনটা আপনাকে আমার সঙ্গী হিসেবে পাবো।”
অর্ণব হেসে বলল, “আপনি জানতেন, সুনোর, জীবন সবসময় এমনই হয়। একে অপরকে কখনো কখনো আমাদের কিছু বিশেষ মুহূর্তের জন্য বেছে নিতে হয়।”
অর্ণব এবং সুনোর পরবর্তী কিছু মিনিট একে অপরের মধ্যে কথা বলার মধ্য দিয়ে কাটিয়ে দিলেন। তারা দুজনই একে অপরকে জানার চেষ্টা করছিলেন, দুজনের জীবনের লক্ষ্য এবং চিন্তা-ভাবনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে। সুনোর তার দেশ, তার অভিজ্ঞতা এবং পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে তার যাত্রার কথা বলল, যেখানে সে এমন এক জীবনের জন্য সংগ্রাম করেছিল, যা সবকিছুতে সার্থক হতে চলেছে।
অর্ণব তার জীবনের উদ্দেশ্য এবং ছোট-বড় লক্ষ্যগুলি নিয়ে আলোচনা করল, যা তাকে জীবনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। তাদের কথায় এক ধরনের সমঝোতা তৈরি হচ্ছিল, যেন তাদের মাঝে এক অদৃশ্য সম্পর্কের সূচনা হচ্ছিল। সুনোর অনুভব করল, তার জীবনের যাত্রা এখন এমন এক জায়গায় পৌঁছেছে যেখানে একজন নতুন সঙ্গীর পাশে থাকা তাকে নতুন আশায় পূর্ণ করবে।
অর্ণব হাসিমুখে বলল, “যতটুকু আমরা একে অপরকে জানলাম, আমি নিশ্চিত, আপনার সঙ্গে আমার সঙ্গী হয়ে কিছু সময় কাটালে আমার জীবন আরও পূর্ণ হবে।”
সুনোর একটু থেমে গিয়ে তার চোখে একটি স্নিগ্ধ হাসি নিয়ে বলল, “আপনি কি জানেন, অর্ণব, কখনো কখনো আমাদের জীবন এমন এক মুহূর্তে এসে দাঁড়ায়, যখন আমরা খুব স্পষ্টভাবে বুঝতে পারি যে, জীবনটা কি হতে পারে, এবং সেই মুহূর্তটি বেঁচে থাকার একমাত্র উদ্দেশ্য।”
অর্ণব কিছুটা অবাক হয়ে বলল, “আপনি ঠিকই বলছেন। জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময় আসলে কোনো এক মুহূর্তে আসে, যা অনুভব করা যায়, কিন্তু কথা বলে প্রকাশ করা যায় না।”
রাত গভীর হতে শুরু করেছিল, কিন্তু তারা দুজন একে অপরকে জানার জন্য কিছু সময় আরো কাটাতে চাইল। সুনোরের কাছে এই মুহূর্তটা ছিল একেবারে নতুন, এক রকমের আবেগের উদযাপন, যেখানে সে কেবল একটি নতুন সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু সেই সম্পর্কের মধ্যে গভীরতা ছিল।
অর্ণব, তার স্নিগ্ধ হাসি দিয়ে সুনোরকে বলল, “আপনি জানেন, আজকের রাতটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা রাত।”
সুনোর মাথা নিচু করে মৃদু ভাবে বলল, “আপনি যদি বলেন, তাহলে আমি এটাও বিশ্বাস করতে পারি।”
তাদের মাঝে কোনো শব্দ ছিল না, কিন্তু সেই নীরবতায় ছিল এক গভীর সম্পর্কের সূচনা। একে অপরকে বুঝতে পারার, সম্পর্কের প্রকৃত মুল্য গ্রহণ করার মুহূর্ত ছিল এই রাতটি। শিপ্রা আর অর্ণব, তারা জানতো, আজকের রাতটি তাদের জীবনের এক নতুন অধ্যায় হবে।
