নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীরা দ্রুত সাপ্লিমেন্টারি (অতিরিক্ত) পরীক্ষার দাবিতে রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছেন। এ দাবিতে আগামী ১৪ জুলাই দেশের সব বিভাগের শিক্ষা বোর্ড কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ‘এসএসসি পরীক্ষা ২০২৫ ব্যাচের অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা’ এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
তাদের অভিযোগ, শুধুমাত্র এমসিকিউ অংশে ১-২ নম্বর কম থাকার কারণে তারা ফেল করেছেন। যদিও রচনামূলক অংশে অধিকাংশেরই নম্বর ৪০ থেকে ৫০-এর বেশি ছিল। ফলস্বরূপ তারা এক বছরের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ছিটকে পড়েছেন।
তারা আরও জানান, রচনামূলক ও এমসিকিউ অংশে আলাদাভাবে পাসের নিয়মের কারণে প্রায় ছয় লাখ শিক্ষার্থী ফেল করেছেন। তারা এ নিয়মকে অমানবিক ও শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার ছাড়াই বাস্তবায়িত বলে অভিহিত করেন।
ফেল করা শিক্ষার্থীদের দাবি, যেসব শিক্ষার্থী এক বা দুই বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন, তাদের জন্য ১-২ মাসের মধ্যে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার সুযোগ দিলে অধিকাংশই পাস করবেন। এতে করে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়া ও সমাজে অবহেলার শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পাবেন।
এদিকে, ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুললে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির জানান, “আমরা কোনো চাপ ছাড়াই প্রকৃত ফল প্রকাশ করেছি। পরীক্ষকদের নিরপেক্ষভাবে খাতা মূল্যায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।”
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ১৯ লাখ ২৮ হাজার ১৮১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছেন ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন, আর ফেল করেছেন ৬ লাখ ৬৬০ জন। সবচেয়ে বেশি ফেল করেছেন গণিত বিষয়ে।
এ বছর পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত বছর এই হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন, যা গত বছরের তুলনায় ৪৩ হাজার ৯৭ জন কম।
পাসের হারে শীর্ষে রয়েছে রাজশাহী বোর্ড (৭৭.৬৩%), আর সবচেয়ে পিছিয়ে বরিশাল বোর্ড (৫৬.৩৮%)। বরিশাল বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী জানান, “গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ও গণিতে দুর্বলতা ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে।”
শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকদের মতে, শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে দ্রুত সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হলে অনেকেই পুনরায় মূল ধারায় ফিরতে পারবেন।