রংপুর জেলা প্রতিনিধি ঃ
আজ (১৫ সেপ্টেম্বর) শুক্রবার দুপুর পৌনে ১টায় রংপুর নগরীর দর্শনাস্থ পল্লী নিবাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেন, সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার সম্পূর্ণভাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। আমি যখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম তখন দ্রব্যমূল্য রিজেনবল পর্যায়ে রাখার ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। যখন দাম বেড়েছে তখন জনগণ জানত যে বেড়েছে। যখন কমেছে বা কমা উচিত ছিল তখনো তা জনগণ জেনেছে। তখন মানুষের আস্থা ছিল। এখন নানা অজুহাত দিয়ে দাম একেবারেই নিয়ন্ত্রণহীন করা হচ্ছে।
এর আগে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত করেন তিনি।
এ সময় সঙ্গে ছিলেন পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি শেরিফা কাদের এমপি, অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, ভাইস চেয়ারম্যান আদেলুর রহমান আদেল এমপি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের
বলেন, এখন বিশ্ববাজারের চেয়ে আমাদের দেশে পণ্যের দাম অনেক বেশি। এমনকি শ্রীলঙ্কা যেটাকে আমরা ব্যর্থ রাষ্ট্র বলেছিলাম, যারা ঘোষণা দিয়ে দেউলিয়া হয়ে গেছে। আর পাকিস্তান যেটাও ব্যর্থ রাষ্ট্রের মতো ঘোষণা হয়ে গেছে। যাকে আমরা খারাপের উদাহরণ হিসেবে সব সময় বলে থাকি তারাও আমাদের চেয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অনেক ভালো অবস্থানে আছে। তাদের দেশে নিত্যপণ্যের মূল্য আমাদের চেয়ে অনেক কম। বিশ্ববাজারের তুলনায় এখন আমাদের দেশের পণ্যের মূল্য অনেক বেশি।
সরকারিভাবে তিন পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়া প্রসঙ্গে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দাম যেটা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, আমি মনে করি এটা কখনই সফল হওয়া সম্ভব নয়। দাম বেঁধে দেওয়ার একটা নিয়ম ছিল, কতটুকু দাম রিজেনবল হতে পারে হিসাবনিকাশ করে সেটা জানানো হয়। রিজেনবলের বাইরে কেউ নিলে একটা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হয়। রিজেনবল যেটাকে বলা হবে তা যুক্তিসঙ্গত দাম। সেটার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়, যথেষ্ট ঘাঁটাঘাঁটি করতে হয়, ডাটা নিতে হয়, ইভেন ডিমান্ড অ্যান্ড সাপ্লাইয়ের ওপর তা নির্ধারণ হয়। যদি সেটা ঠিক না থাকে তাহলে আমি যতই চাপাচাপি করি এটা স্বাভাবিকভাবে ঠিক হবে না।
তিনি আরও বলেন, উনারা এসব যাচাই-বাছাই করেছেন কিনা আমি জানি না। আমার সন্দেহ, এটা উনারা করেননি। সঠিকভাবে না বুঝেই কিছু একটা দাম নির্ধারণ করেছেন।
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত চিন্তা করছি ৩০০ আসনে নির্বাচন করবো। ভবিষ্যতে কী করবো, ভবিষ্যতের অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা হবে। যেহেতু এখনো রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক অস্থিতিশীল, অনিশ্চিত ও অস্বচ্ছ। সবকিছু জেনে বিবেচনায় নিতে হবে। আমার মনে হয় সবাই এই অনিশ্চয়তার দিকে তাকিয়ে আছে। সরকার এক ধরনের নির্বাচন করতে চাচ্ছে, সরকারের বিপক্ষ আরেক ধরনের নির্বাচন করতে চাইছে। কোন পদ্ধতিতে আসলে নির্বাচন হবে, সেটাই আমরা জানি না। নির্বাচন সঠিক পথে সঠিক সময়ে হবে কিনা, এটা নিয়ে জনগণের মধ্যে অনেক কানাঘুষা ও আশঙ্কা আছে। সব মিলিয়ে আমরা এখনই সঠিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। শেষ পর্যন্ত কে লড়বেন আর কে থাকবেন সেটাও অনিশ্চিত। রংপুর-৩ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত নিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ও পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইয়াসির, জেলার সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাফিউল ইসলাম সাফি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লোকমান হোসেন, জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল মামুন সহ অনেকেই।