রাজধানীর গেণ্ডারিয়ায় গ্যাস লাইনের বিস্ফোরণে দগ্ধ হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান শাওনের মৃত্যুতে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাঁর পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের প্রসংগে গতকাল রবিবার (৭ই মে) উপাচার্যের নিকট চিঠি প্রদান করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস)।
জবিশিসের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মোঃ লুৎফর রহমানের সাক্ষরকৃত চিঠিতে বলা হয়, “গত ০১ মে ২০২৩ তারিখে ঢাকার ধূপখোলা বাজারের রাস্তার পাশে ওয়াসার পানির লাইন স্থাপনের
সময় গ্যাসলাইন ছিদ্র হয়ে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডে গুরুতর দগ্ধ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের
২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান শাওন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ মে ২০২৩ শনিবার সকালে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। প্রিয় শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছে এবং একইসাথে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি উক্ত ঘটনায় দায়ী সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং মেহেদী হাসান শাওনের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অধ্যাপক ইমদাদুল হক বলেন, “আমরা শিক্ষক সমিতির চিঠি পেয়েছি। যেহেতু ঐ শিক্ষার্থীর পরিবার থেকে মামলা করতে রাজি হয়েছে, আমরা তাদের সব ধরণের সহযোগিতা করব।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল জানান, “ আমরা চেয়েছিলাম পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করুক। যদি তারা মামলা করতে রাজি না হয় তখন আমরা মামলা করতে প্রস্তুত ছিলাম। সেব্যাপারে আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও আইন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি মামলার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট প্রস্তুত করতে। এরমধ্যে তারা মামলা করতে রাজি হয়েছে। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দোষীদের শাস্তি এবং মেহেদীর পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের লক্ষ্যে মামলার সব বিষয়ে তাদের সহযোগিতা করব।”
উল্লেখ্য, গত ১লা মে সকালে রাজধানী পুরাণ ঢাকার গেণ্ডারিয়ার ধূপখোলা বাজারে রাস্তার থাকা গ্যাসলাইনে বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান শাওন ধূপখোলায় বাজার করতে যাওয়ার পথে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসারত অবস্থায় গত ৬ মার্চ সকালে শাওনের মৃত্যু হয়।