সত্যিকার অর্থে যদি জনগণ ভোট দিতে পারে, যদি জনগণের ইচ্ছা টাকে প্রয়োগ করতে পারে তাহলে তারা (আওয়ামী লীগ) দশটা আসনও পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (২৪ জুন) বিকেলে বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিএনপির সহযোগী সংগঠনের যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের ডাকা তারুণ্যের সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সংবিধানে লেখা আছে-দেশের মালিক জনগণ। এই জনগণক ভোট দিতে পারে? ভোট কেন দেই আমরা? আমাদের একজন প্রতিনিধি নির্বাচন করি। যে পার্লামেন্টে গিয়ে আমাদের কথা বলবে। আমাদের জন্য আইন পাস করবে। জনগণ যাতে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে। সেই জন্যই তো ভোট দিয়ে এমপি নির্বাচন করে পার্লামেন্টে পাঠায়।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সকলকে ভোট দেওয়া বন্ধ রেখে; নিজেরা সিল দিয়ে আগের রাতে ভোট করে। তারপরে বলে ভোট হয়ে গেছে, আমরা জিতে গেছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার শুধু ভোট চোর না, এরা আমাদের পকেটও মারে। এই সরকার তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে চুরি করা, ডাকাতি করা, আর চুরি করা টাকা বিদেশে পাচার করা। সংবিধান অনুযায়ী এই সরকার বৈধ নয়। কারণ যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংবিধানে নিয়ে এসেছিলেন। নির্বাচনের সময় একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে তাই।
তিনি বলেন, এটা কিন্তু আওয়ামী লীগের দাবি ছিল। ১৭৩ দিন হরতাল করেছে তারা। ১১ জন মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। তাদের দাবি অনুযায়ী এবং জনগণ দেখলেন এই আইনটি করলে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারবেন। পরে পার্লামেন্টে আইন পাস হয়। যেহেতু নির্বাচন আসলেই একটি গোলমাল শুরু হয়। তাই চিন্তা করেছি নির্বাচন করব একদম নির্দলীয় সরকারের অধীনে। চারটা নির্বাচন হয়েছে। কোন গোলমাল হয়নি। একবার বিএনপি এসেছে, আওয়ামী লীগ এসেছে। সবাই মেনে নিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের অধীনে নাকি ভালো নির্বাচন হয়। চরমোহনাইর হুজুর তাকে আঘাত করতে পর্যন্ত দ্বিধাবোধ করেনি। আবার ইলেকশন কমিশন বলে ‘তিনি কি ইন্তেকাল করেছেন’। এমন ইলেকশন কমিশন বানিয়েছে শেখ হাসিনা। প্রধান ইলেকশন কমিশন; যিনি প্রার্থী না মরলে শান্তি পান না। এরা আবার বলে, আমাদের অধীনে নির্বাচন হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গোটা বরিশাল বিভাগ মহান কীর্তিমান পুরুষদের জন্ম হয়েছে। এখানে চারণ কবি মুকুন্দ দাসের জন্ম হয়েছে, শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের জন্ম হয়েছে। তিনি শুধু বরিশালের নয় সমগ্র অবিভক্ত বাংলার নতুন দিগন্ত দেখিয়েছিলেন। এই অঞ্চলে অনেক অনেক ত্যাগী মুক্তিযোদ্ধারা রয়েছেন, এদের মধ্যে অনেকে এখনও বেঁচে আছেন। যারা ৯০ সালের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করেছেন তারাও এই বরিশালের মাটিতে আছেন।
তিনি বলেন, আজকের নতুন একটি সংগ্রাম শুরু হয়েছে, এই সংগ্রাম ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ, অবৈধ সরকার, তারা আজকে মায়েদেরকে সন্তানহারা করেছে। আজ ১৪ বছর ধরে অত্যাচার নির্যাতন করছে। জনগণের ক্ষতি করছে।’
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে ও যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান এবং ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী প্রমুখ।