স্টাফ রিপোর্ট: অবহেলা আর যত্নে নষ্ট হচ্ছে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গৌরব সিলেট।পর্যটক ও প্রতিদিন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা মানুষ সৌন্দর্য উপভোগের জন্য তৈরি করা হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী স্থানের সংগৃহীত প্রতিকৃতি।কিন্ত মাত্র ৬ বছরের ব্যবধানে আজ তা ময়লা অবর্জনার স্তূপ ও ঘাসের মধ্যে অযত্ন আর অবহেলা নষ্ট হচ্ছে।তবে জেলা প্রশাসক বলছেন, এই বিষয়ে তাদের উদ্যোগ রয়েছে।
জানা যায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রবেশের সময় প্রধান ফটকের ডান পাশে ৩০ শতক ভূমির উপর গৌরব সিলেট নির্মিত হয়।জেলা প্রশাসনের নিজস্ব তহবিল থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা ব্যায়ে সেখানে স্থাপন করা হয় চা-বাগান, পাহাড়, নদী আর ঝর্ণার অপূর্ব জলরাশি।
এছাড়াও রাখা হয় ব্রিটিশ আমলের ঐতিহাসিক ক্বীন ব্রিজ ও আলী আমজাদের সেই বিখ্যাত ঘড়িটিও।রাখা হয়েছে ১৯৪০ সালে জেলা প্রশাসনের ব্যবহৃত প্রথম গাড়িটি।মাত্র ৬ বছরের ব্যবধানে সেখানকার অবস্থা এখন জীর্ণ অবস্থা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গৌরব সিলেট’র প্রবেশের দুটি গেইট বন্ধ।একটি গেইটে তালা দিয়ে রাখা। ঠিক সামনে ময়লার স্তূপ ও পানের দোকান নিয়ে বসে আছেন একজন।আর অপর গেইটির একপাশ ভেঙ্গে যাওয়া তা বন্ধ রাখা হয়েছে গাছ, ডাস্টবিন ও ক্যাবল দিয়ে। ভেতরে লম্বা লম্বা ঘাস গজিয়ে উঠায় উদ্বোধনের সেই নামফলকটি মুছে যেতে বসেছে। শুধু তাই নয় শেওলা ও ঘাস ধরছে পাহাড়ের মধ্যে।ফলে পাহাড়ে নেই সবুজের সমারহ।পাহাড় আর নামফলক নয় জেলা প্রশাসনের ব্যবহৃত প্রথম গাড়িটি একটি টিনের শেড তৈরি করে রাখা।কিন্তু তাতেও ধুলাবালি পড়ে গড়ির রঙ মলিন হয়েছে।সাথে ও মরীচিকা ধরেছে। ক্বীন ব্রিজ এবং আলী আমজাদের ঘড়ি ও চা-বাগানে রয়েছে অযত্নের ছাপ। ক্বীন ব্রিজের নিচে লেকে শেওলা ও ময়লা আবর্জনায় পানিতে ভেসে উঠছে মরা মাছ।গাছ থেকে পড়া শুকনো পাতায় ভরে গেছে আশপাশ।আর চারপাশের সীমানা বেষ্টনীর লাইটগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
২০১৭ সালে নির্মিত গৌরব সিলেট’র উদ্বোধনের পর থেকে শুরুর দিকে দর্শনার্থীদের বেশ আকর্ষণ করেছিলো। তখন অনেক পর্যটকও গৌরব সিলেট দেখার জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসা যাওয়া করতেন।সেলফি তুলে দর্শনীয় এই প্রকল্পটির সৌন্দর্য তুলে ধরতেন সোস্যাল মিডিয়ায়।এছাড়াও সিলেটের পর্যটনের অনেকগুলো বিষয় এক সাথে শিশুদের সামনে উপস্থাপনের এমন সুযোগ নিয়েছিলেন অনেক অভিভাবক। কিন্তু এখন আর সেখানে কেউ আসলেও ফিরে যেতে হচ্ছে।
মুহিবুর রহমান নামে এক দর্শনাথী বলেন, একে তো সরকরারি প্রতিষ্ঠান।তারমধ্যে এমন সুন্দর স্থানটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যেনো নষ্ট না হয় তার জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
দর্শনাথী সাগর আহমদ বলেন, জায়গাটা খুবই সুন্দর ছিল।এক সাথে সিলেটের অনেকগুলো ঐতিহ্যবাহী স্থান ও স্থাপনা দেখার সুযোগ হয়েছিল।কিন্তু অযত্ন ও আর অবহেলা সৌন্দর্য হারাচ্ছে স্থানটি।
গৌরব সিলেট’র নকশা করেছিলেন দুজন চিত্রশিল্পী।তারমধ্যে একজন হচ্ছেন একজন ইসমাইল গণি হিমন। তিনি বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, কয়েক বছর আগে একবার রঙ মিস্ত্রি দিয়ে কাজ করিয়ে আসল সৌন্দর্যটা নষ্ট করা হয়েছে।
গৌরব সিলেট’র বিষয়ে নিয়মিত খোঁজ খবর নেন সাবেক জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার। তাঁর বরাত দিয়ে হিমন বলেন, এখানকার চিত্র বিভিন্ন সময় দেখেছেন তিনি।এর দুরবস্থা দেখে তিনি অনেক কষ্ট পেয়েছেন।
এব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো.মজিবুর রহমান বলেন, এই বিষয়টি আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে।শীঘ্রই রঙ করা হবে।