বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মাকে অবশ্যই নিজের ও সন্তানের শরীরের দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। এই সময় একটু-এদিক হলেই তাঁর শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমনকি এই কারণে মায়ের বুকের দুধের ঘাটতিও হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, জন্মের পর ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুর জন্য মাতৃদুগ্ধের কোনও বিকল্প নেই। মায়ের দুধই শিশুকে বিভিন্ন রোগের সঙ্গে লড়াই করার শক্তি দেয়।
তবে সচেতনতার অভাবে মায়েরা এই সময় এমন কিছু খাবার খেয়ে নেন যাতে জটিলতা তৈরি হয়। তাই প্রতিটি ব্রেস্টফিড মাকে ডায়েট নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। এ সময় যেমন কিছু খাবার অবশ্যই খেতে হবে তেমনই কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
চলুন জেনে নেই বুকের দুধ পান করানো মাকে কি কি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
সামুদ্রিক মাছ
মায়ের শরীরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের চাহিদা থাকে অনেকটাই বেশি। তাই এর চাহিদা মেটাতে অনেকেই এখন স্যালমন, টুনা, সার্ডিনের মতো বিদেশি সামুদ্রিক মাছ খান। এই মাছগুলিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি। ফলে শিশু ও মায়ের শরীর সুস্থ খাকে।
তবে অনেক গবেষণায় বলছে, এই ধরনের মাছে থাকে অনেকটা পরিমাণে পারদ। এই পারদ কিন্তু শিশুর ক্ষতি করতে পারে। তার মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা হয়। তাই ব্রেস্টফিড করানোর সময় এই ধরনের মাছ না খাওয়াই ভালো।
বাজারের ভেষজ পণ্য এড়িয়ে চলুন
বাজারে বর্তমানে নানারকম ভেষজ পণ্য পাওয়া যায়। কিছু কিছু সংস্থার দাবি, তাঁদের তৈরি ভেষজ পণ্য খেলে নাকি ব্রেস্টফিড করা মহিলাদের শরীর সুস্থ থাকে। এমনকি শিশুর বিকাশ হয় দ্রুত। তবে মনে রাখবেন, এমনতর দাবির সপক্ষে তারা কোনও গবেষণার কথা উল্লেখ করেন না। তাই বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে কোনও ভেষজ প্রোডাক্ট কিনে না খাওয়াই ভালো। বরং প্রয়োজন হলে নিজেই বাড়িতে তুলসী, আদা সহযোগে চা বানিয়ে খান। এতেই বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
মদ্যপানকে বলুন না
মদ্যপান শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই পানীয় নিয়মিত পান করলে ক্যানসারের আশঙ্কা তৈরি হয়। ব্রেস্টফিড করানোর সময় মদ খেলে শিশুর শরীরেও পৌঁছাতে পারে অ্যালকোহল। আর এটা একজন নবজাতকের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতিকর। তাই ব্রেস্টফিড করার সময় মদ্যপান একদম ছেড়ে দিন। এতেই শিশু সুস্থ থাকবে।
এড়িয়ে চলুন কফি
কফিতে থাকা ক্যাফেইন মায়ের বুকের দুধের সাথে করে শিশুর শরীরেও পৌঁছে যেতে পারে। সদ্যোজাত শিশুরা কফি সহজে হজম করতে পারে না। এ ছাড়া এতে তার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। তাই ব্রেস্টফিড করার সময় যতটা সম্ভব কফির নেশা ছাড়তে হবে।
প্রক্রিয়াজাত খাবারে না বলুন
প্রক্রিয়াজাত ফুড খাওয়া কিন্তু আপনাকে এই সময় কমাতেই হবে। এই ধরনের খাবারে রয়েছে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যালোরি, ফ্যাট ও চিনির প্রাচুর্য। ফলে মায়ের শরীরে একাধিক সমস্যা তৈরি করতে পারে এই ধরনের খাবার। এমনকি ওজনও বাড়ে। বেশকিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে ক্যানসারের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। তাই এই ধরনের খাবার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। বরং ফলমূল, শাক-সবজি বেশি পরিমাণে খান।