নেত্রকোনা প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় রফিকুল ইসলাম শামিম (৩৬) নামে যুবদলের এক নেতা বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাঁচ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। গত শনিবার রাতে তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি গইচাসিয়া সেতুর নিচে পানিতে পড়ে থাকতে দেখা গেলেও এখন পর্যন্ত তাঁর কোনো সন্ধান মেলেনি।
নিখোঁজ রফিকুল ইসলাম কেন্দুয়ার গন্ডা ইউনিয়নের মনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী।
রফিকুলের পরিবার জানিয়েছে, প্রতিপক্ষের করা মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে তিনি গত বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
রফিকুলের স্ত্রী নাজমা আক্তার অভিযোগ করেন, ‘গ্রামের মাদ্রাসা নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে দুই পক্ষ তৈরি হয়েছে। আমাদের প্রতিপক্ষ এক সপ্তাহ আগে আমাদের বাড়িতে এসে অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দিয়ে গেছে—আমার স্বামীকে নাকি আর জীবিত রাখবে না। এখন পাঁচ দিন হয়ে গেল, তাঁর কোনো খোঁজ নেই। আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই।’
স্থানীয় সূত্র, পরিবার ও পুলিশ জানায়, গ্রামের মনকান্দা এম ইউ আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এম এন মহিবুল্লাহ ও সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে এলাকায় দুইটি পক্ষ সৃষ্টি হয়—একটিতে রয়েছেন রফিকুল, অপরটিতে মোস্তফা কামাল নামের আরেক স্থানীয় ব্যক্তি। উভয়েই বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
গত ৮ জুন উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বাড়িঘর ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও মারধরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। পরিবারের দাবি, এই ঘটনার পর থেকেই রফিকুল আতঙ্কে ছিলেন।
রফিকুলের বাবা আক্কাস মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে গুম করা হয়েছে। প্রতিপক্ষ মোস্তফার লোকজনই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’
তবে মোস্তফা কামালের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। সোমবার তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ঘর তালাবদ্ধ ছিল। প্রতিবেশীরা জানান, রফিকুল নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই মোস্তফা কামাল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘নিখোঁজ রফিকুল ইসলামের মোটরসাইকেলটি গইচাসিয়া সেতুর নিচে পাওয়া গেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি।’
এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে ওসি জানিয়েছেন।