সিলেট প্রতিনিধি:: সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দাখিলকৃত হলফনামায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো.আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় অসত্য তথ্য দিয়েছেন বলে এ কে এম আবু হুরায়রা (সাজু) নামের এক ব্যক্তি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন।
তিনি সিলেট নগরের নরসিংটিলা এলাকার বাসিন্দা। সোমবার (১২ জুন) বিকেলে সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদেরের কাছে তিনি লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরের পর বিষয়টি জানাজানি হয়। তিনি অভিযোগ করেন, নৌকার প্রার্থী হলফনামায় জন্মতারিখ ও শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয়টি অসত্যভাবে উপস্থাপন করেছেন। এর ফলে তাঁর প্রার্থিতা বাতিল করা হোক।
এবিষয়ে জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের বলেন, ‘মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের আগে অভিযোগ পেলে তথ্য যাচাই-বাছাই করা যেত। এখন আমাদের আর কিছুই করার নেই।’
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাঁর হলফনামায় জন্মতারিখ ১৯৭০ সালের ১ জুলাই এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ (সম্মান) উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তিনি ১৯৮৮ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৮৪২০৮ এবং শিক্ষাবর্ষ ১৯৮৬-১৯৮৭। রেজিস্ট্রেশন, প্রবেশপত্র ও সনদপত্র অনুযায়ী জন্মতারিখ ১৯৭২ সালের ১ জুলাই।
অভিযোগে আরও বলা হয়, পরবর্তী সময়ে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তাঁর জন্মতারিখ পরিবর্তন করার জন্য কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড বরাবর আবেদন করেছিলেন, যা বোর্ড কর্তৃপক্ষ নামঞ্জুর করে। এ ছাড়া তিনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে ১৯৮৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১৯৯০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেই বাংলাদেশ ইয়ুথ প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাজ্যে যান এবং সেখানে পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশে কোনো প্রকার পড়াশোনা কিংবা পরীক্ষায় অংশ নেননি।
এ ছাড়া আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পাসপোর্টের জন্মতারিখের সঙ্গে এসএসসির সনদে উল্লেখিত জন্মতারিখে গরমিল আছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ কে এম আবু হুরায়রা সাজু লিখিত অভিযোগে দাবি করেন, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী হলফনামায় ভুল জন্মতারিখ উল্লেখ করে এবং সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ দাখিল করে নির্বাচন বিধিমালা ২০১০-এর বিধি ১৪-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন। তিনি দ-বিধি ১৮৬০-এর ধারা ১৮১ অনুযায়ী
ফৌজদারি আইনে অপরাধ করেছেন, যার সর্বোচ্চ শাস্তি ৩ বছরের কারাদ-সহ জরিমানা।
লিখিত অভিযোগে হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়া এবং জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়ায় মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিলের পাশাপাশি ফৌজদারি আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।