মোঃ নাজমুল ইসলাম (নেত্রকোণা প্রতিনিধি)
নেত্রকোণা বারহাট্টা উপজেলার প্রেম নগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী মুক্তি রানী বর্মন হত্যার প্রধান অভিযুক্ত আসামি কাউছার মিয়া (১৮) কে গ্রেফতার করেছে নেত্রকোণা ডিবি পুলিশ। কাউছার মিয়া প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের শামছু মিয়ার ছোট ছেলে।
বুধবার (৩ মে২০২৩) দুপুর ২ ঘটিকায় আসামি কাউছাররের নিজ বাড়ির পার্শ্ববর্তী জঙ্গল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, ইয়ুথ গ্রুপ, কমিউনিটি ফোরাম ও সর্বস্তরের নাগরিক সমাজ, বারহাট্টা এর আয়োজনে বারহাট্টা স্টেশন রোড়ে মুক্তি রাণী বর্মনের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদী মানববন্ধন করা হয়।
একইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কাউসারকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. হারুন অর রশিদ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. লুৎফর রহমান, খালিয়াজুরী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলামসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের সদস্যবৃন্দসহ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
কাউছারের কাছ থেকে ঘটনা প্রসঙ্গে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশিদ জানান, আসামি কাউছার দীর্ঘদিন যাবৎ মুক্তি রাণী বর্মন’কে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত করে।
উল্লেখ্য যে, নিহত মুক্তি রানী বর্মন বারহাট্টা উপজেলার বাউসী ইউনিয়নের ছালিপুরা গ্রামের নিখিল চন্দ্র বর্মনের মেয়ে। সে প্রেম নগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। গত ২ মে মঙ্গলবার দুপুরে প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে একেই গ্রামের শামছু মিয়ার ছোট ছেলে, মোঃ কাউছার মিয়া (১৮) রাস্তায় দা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে মুক্তি রানী কে গুরুতর আহত করে। আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী আহত মুক্তিকে দ্রুত বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিহত মুক্তির বড় ভাই লিটন বর্মন জানান, ময়নাতদন্ত শেষে আজ বুধবার নিহত মুক্তি রানী বর্মনের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন সৎকার কাজের প্রস্তুতি চলছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. হারুন অর রশিদ জানান, আসামী গ্রেফতারের জন্য জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ফয়েজ আহমেদ নিজ দ্বায়িত্বে তাৎক্ষনিক জেলা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখার সমন্বয়ে চারটি টিমে বিভক্ত করে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। এর পর থেকেই ঘাতক কাউছারকে ধরতে কাজ শুরু করা হয়। অবশেষ, ঘটনার ২৪ ঘন্টার ভেতরে ঘটনার মূল হোতা কাউছারকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।