‘ভালো নেই সোনালি সাফল্যের অগ্রনায়ক’ ও ‘সব হারিয়ে এখন আমি নিঃস্ব’-১৫ ফেব্রুয়ারি গণমাধ্যমের খেলার পাতায় ২০০৩ সাফজয়ী বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক রজনীকান্ত বর্মণকে নিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল দুটি শিরোনামের দুটি প্রতিবেদন।
রজনীর দুর্দশার গল্প দেশ রূপান্তরের পাতায় ফলাও করে প্রচারের পর থেকেই ক্রীড়াঙ্গনে শুরু হয়ে গিয়েছিল আলোচনা। বুট জোড়া খুলে রাখার পর যে কঠিণ সময়ের সম্মুখিন হতে হয় ফুটবলারদের, জীবনধারণই যে অনেকের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে, সেই পুরানো আলোচনাই নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছিল।
রজনীর বিভিষিকাময় বর্তমান নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন দুটি চোখ এড়ায়নি সরকারের উপর মহলের। রজনীর দুর্দশার কথাটা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল মারফৎ পৌঁছে গিয়েছিল সরকার প্রধান শেখ হাসিনার কাছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে রজনীকে ফোন করে খোঁজ খবর করেন এবং সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।
ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী সেই কথা রেখেছেন। রজনীকে নগদ ৩০ লাখ টাকা অর্থ সহায়তার পাশাপাশি গাজীপুরে বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রজনীকে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগীতা পেতে বড় ভূমিকা রাখা সাবেক ফুটবলার আবদুল গাফফার।
প্রধানমন্ত্রীর এই সহযোগীতা রজনীকে দেখাচ্ছে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন। দেশের অন্যতম সেরা এই ডিফেন্ডার বলেন, ‘এই খবর আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের। আমার এই দুঃসময়ে সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে এত বড় সহায়তা করছেন। এটা আমাকে নতুন করে বাঁচার স্পৃহা জোগাবে। তাই ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রীর কাছে চীর কৃতজ্ঞ।’
শুধু রজনী নন, আরও কয়েকজন সাবেক ক্রীড়াবিদকে একসঙ্গে আর্থিক সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে। দুস্থ ও সমস্যাগ্রস্থ ক্রীড়াবিদ, সংগঠকদের সহায়তা এনে দিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে চলেছেন আবদুল গাফফার।
তিনি বলেন, ‘রজনীর বর্মনের ব্যাপারে ক্রীড়া সাংবাদিকরা যে ভাবে এগিয়ে এসেছিলেন তার ফল হিসেবে প্রধানমন্ত্রী রজনীকে ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও তাকে গাজীপুরে একটি বসতবাড়ি করে দেওয়ার জন্য সরকারি ভাবে অনুদানের জন্য ডিসিকে বলে দিয়েছেন।’
তিনি জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত ফুটবলার কাজী আনোয়ার, যিনি ১৯৮১ সালে ছিলেন আবাহনীর অধিনায়ক এবং ১৯৮২ সালে ফুটবল মাঠ থেকে আরও তিন ফুটবলারের সঙ্গে গ্রেপ্তার হয়ে ১৭ দিন জেল খেটেছিলেন, তাঁকে ২০ লাখ টাকা ও একটি ফ্ল্যাট এবং রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাইক্লিস্ট ফারহানা শিলাকে ১ লাখ টাকা নগদ ও ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গাফফার বলেছেন, ‘খেলাধুলার মানুষের বিপদে সবসময় পাশে দাঁড়ান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী রাসেল। তাদের কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।’