নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি ঃ
নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামে দু’ পক্ষের বিরোধ শালিসে মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। গত বুধবার রাতে ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে শালিস বৈঠক অনুষ্টিত হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের সুয়েব আহমদের পিতা মৃত রসিদ উল্যা
মারা যান গত প্রায় দুই বছর পূর্বে। এরপর থেকে সুয়েবের চাচা লন্ডন প্রবাসী এলকাছ উল্লা ওরফে রফিক উল্লা ভাতিজা সুয়েবকে জায়গা সম্পত্তি বুজিয়ে না দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন।
এমনকি বাড়ি থেকে বের হবার কলাপশিবল গেইট চাচা রফিক উল্লা তালাবদ্ধ করে রাখেন। ছোট একটি গেইট দিয়ে সুয়েব চলাফেরা করেন। কিন্ত বাড়িতে একটা রিক্সা পর্যন্ত নিয়ে আসতে পারেননি গেইট তালাবদ্ধ থাকায়। এ ব্যাপারে সুয়েব গ্রামবাসীর সরনাপন্ন হলেও প্রভাবশালী রফিক উল্লার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পাননি।
এমতাবস্থায় গত ২ আগষ্ট ছিল সুয়েবের বোনের বিয়ে। বর এবং বরযাত্রীর গাড়ী বাড়ীতে আনতে গেইটের তালা খুলতে চাচা রফিক উল্লাকে অনুরোধ করে। তিনি কোন ভাবেই তালা খুলে দিবেননা বলে সাফ জানিয়ে দেন। পরবর্তীতে নিরুপায় হয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর সুয়েব তালা ভাঙ্গতে গেলে চাচা চাচীর সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। সুয়েব জানান এ সময় তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল। হৈ হুল্লোর শুনে ঘটনা স্থলে ছুটে আসেন পাশের বাড়ির সুয়েবের মামা আলী হোসেন ও জাবেদ আহমেদসহ গ্রামের লোকজন। পরে তাদের হস্তক্ষেপে গেইট থেকেই বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হয়।
চাচা রফিক উল্লা গেইটের তালা খুলে না দেয়ায় পরে সুয়েব অন্য এক আত্মাীয় বাড়ী থেকে তার বোনের বিয়ে সম্পন্ন করেন।
এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই দিন রাতেই চাচা রফিক উল্লা ভাতিজা সুয়েব,তার মামা আলী হোসেন,জাবেদসহ কয়েকজনকে আসামী করে ৩০ লক্ষ টাকা,স্বর্ণালংকার লুটপাট অভিযোগ এনে থানায় মিথ্যা এজহার দেন। নবীগঞ্জ থানার ওসি ডালিম আহমেদ এজাহারটি তদন্ত করতে ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদকে নির্দেশ দেন। পরদিন সরেজমিন তদন্ত করেন তিনি।
পরবর্তীতে বিষয়টি মীমাংসা করার উদ্যোগ নেন ইনচার্জ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। এতে এলাকার মুরুব্বিয়ান তাকে সহযোগিতা করেন। গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে ইনাতগঞ্জ ফাঁড়িতে অনুষ্ঠিত হয় শালিস বৈঠক। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খালেদ আহমদ পাঠান। বৈঠকের শুরুতে দুপক্ষের উদ্যোশ্যে বক্তব্য রাখেন ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। শালিস বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইনাতগঞ্জ ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ আহমেদ জিহাদী,নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাবেদুল আলম চৌধুরী সাজু,নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রাকিল হোসেন, নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আশাহীদ আলী আশা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মুজিবুর রহমান, আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ,,জগন্নাথপুর উপজেলা যুবলীগ নেতা আব্দুল বারিক,৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামিলীগ সভাপতি শাহ আলম বুলবুল দুলুর,বান্দের বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি জসিম উদ্দিন, রিমন আহমেদ প্রমূখ। এ সময় লন্ডন প্রবাসী রফিক উল্লা, আলী হোসেন,জাবেদ আহমেদ,সুয়েব উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা করার পর সিদ্ধান্ত হয় তালাবদ্ধ গেইটে দুপক্ষের কাছে একটা করে চাবি থাকবে। রফিক উল্লার গেইট সংলগ্ন আলী হোসেনের মালিকানাধীন ৩ শতক জায়গা রফিক উল্লা পাবে। এর বিনিময়ে রফিক উল্লা ভাতিজা সুয়েবকে হাওরে চাহিদা ৩০ শতক জায়গা দিবে। বৈঠকে ৩০ লক্ষ টাকা,স্বর্ণাংকার লুটপাটের বিষয়টি মিথ্যা প্রতীয়মান হয়।