সিলেট প্রতিনিধি :: পানি নিষ্কাশনের জন্য নালা কাটাকে কেন্দ্র করে সিলেটের জালালাবাদ থানা এলাকায় দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার(১৪জুন) দুপুর ২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সোনাতলা এলাকায় দেড় ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ৬০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে জালালাবাদ থানা-পুলিশ।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম রুকন।
ওসি জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় বুধবার রাতে ৬০০ জনকে আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। তবে এখন পর্যন্ত এ মামলায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। সংঘর্ষ চলাকালে আহত ৫ পুলিশ সদস্য চিকিৎসাধীন।
জানা যায়, বুধবার বেলা ১১টার দিকে সিলেটের কুমারগাঁও-বাদাঘাট সড়কের পাশে নালা কাটা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সোনাতলা ও মইয়ারচর এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।
দুপুর ২টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চলে এ সংঘর্ষ চলে। এ সময় সংঘর্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হন।
সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ১১৪টি কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ১৪ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫ পুলিশসহ ১৫-২০ জনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের অধীন কুমারগাঁও-বাধাঘাট সড়কটি চার লেনের কাজ চলছে। এ কারণে সড়কের পাশে মাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে। সড়কের পাশে অপরিকল্পিতভাবে মাটি না ফেলে পাকা নালা নির্মাণের দাবি ছিল স্থানীয়দের। মাটিগুলো যাতে সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে নেওয়া হয় সে জন্য বলা হয়। কিন্তু সেগুলো সরানো হয়নি।
এদিকে ভোর থেকে সিলেটে বৃষ্টি শুরু হলে সড়ক জলমগ্ন হয়ে পড়ে। পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় নিচু এলাকা মইয়ারচর, নয়া কুরুমখলা, নাজিরেরগাঁও এলাকায় বাসাবাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এর প্রতিবাদে সিলেট সিটির নবগঠিত ৩৮ ও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের মইয়ারচর, নয়া কুরমখলা, নাজিরেরগাঁও এলাকার বাসিন্দারা কুমারগাঁও-বাদাঘাট সড়ক অবরোধ করেন।
এব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ থামিয়ে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষ জড়িতদের ছত্রভঙ্গ করতে একাধিক কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেটও ছোড়া হয়েছিল।
তবে এর পরিমাণ কত তা হিসাব করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি সদস্যদের খবর দেওয়া হলেও তাদের সংঘর্ষ থামাতে মাঠে নামতে হয়নি। তারা আসার আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ বিষয়ে সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এলাকাবাসীর দাবি অনুযায়ী সোনাতলা বাজার এলাকায় পানি নিষ্কাশনের কাজ করতে গেলে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এতে সওজের কোনো যোগসূত্র নেই। সওজ পরে উভয় পক্ষের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবে