স্টাফ রিপোর্ট:: কখনো মোমবাতি বিক্রি করে। কখনো ফার্মেসীতে ওষুধ ডেলিভারি আবার কখনো টিউশনি পড়িয়ে চলে তার সংসার। নেই তার কোনো দল।নেই নেতাকর্মীর বহর। থানা বা ওয়ার্ডে নেই কোনো কমিটি।একা একা নগরীর অলিগলি ঘুরে বেড়িয়েছিলেন। ভোট চেয়েছিলেন সাইকেল চালিয়ে। কর্মী ও অর্থ না থাকায় তিনি নিজেই লাগিয়েছেন নির্বাচনি নিজের পোস্টার। মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতার আলোচনায়ও ছিলেন না।কিন্তু ভোটের মাঠের নীরব প্রার্থীকে নিয়ে সরব এখন সবাই। বলছি সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাস প্রতীকের মেয়রপ্রার্থী মো.শাহজাহান মিয়া ওরফে শাহজাহান মাস্টারের কথা।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত হলেও সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো.শাহ জাহান মিয়া ওরফে শাহ জাহান মাস্টার।
বুধবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি ২৯ হাজার ৬৮৮ ভোট পেয়ে ৮ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে তিনি হয়েছেন তৃতীয়।তবে সবাইকে ছাপিয়ে আলোচনায় ওঠে এসেছেন শাহজাহান মিয়া।
নৌকা প্রতীকের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯১। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের নজরুল ইসলাম বাবুল পেয়েছেন ৫০ হাজার ৮৬২ ভোট।
শাহ জাহান মিয়া প্রথমে ছিলেন হোটেল কর্মচারী।এরপর সেখান থেকে মোমবাতি ও স্যালাইন বিক্রির কাজ করেন।তারপর সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন।
জানা যায়, মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সম্পদ বিবরণী ও আয়কর রিটার্নের কপি জমা না দেওয়ায় শাহজাহান মিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেন তিনি।আপিল শুনানির আগে সম্পদ বিবরণী ও আয়কর রিটার্নের কপি জমা দেওয়ায় তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান।
হলফনামা অনুযায়ী মো. শাহ জাহান মিয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসএস।সিলেট নগরীর দরগাহ মহল্লায় একটি ভাড়াবাড়িতে থাকলেও তাঁর আদি নিবাস ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলায়।
এদিকে, ফলাফল প্রকাশের পর থেকে শাহজাহান মাস্টারকে নিয়ে সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, আমি যখন সিলেট শহরে আসি, তখন মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখে স্বপ্ন দেখি, একদিন এই শহরের মেয়র হব, এমপি হব, জনপ্রতিনিধি হব; এবং মানুষের সেই দুঃখ দুর্দশা দূর করব।অথচ কে না জানে, তার নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রথমেই আটকা পড়েছিল নির্বাচন কমিশনের যাচাই-বাছাইয়ে।