দিরাই উপজেলা প্রতিনিধি ঃ দিরাই পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যান্ড এলাকাটি যত্রতত্র পার্কিং আর ফুটপাত দখলে বেহাল রূপ ধারণ করেছে। সড়কেই পার্কিং করে রাখা হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহর থেকে আসা নৈশকোচ ও ট্রাক। যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। এতে এ সড়কে যাতায়াতকারীদের যেমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তেমনি পথচারীদেরও পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। যেখানে জেলা শহর সুনামগঞ্জে যেতে ২৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে এক ঘণ্টা সেখানে অধিকাংশ সময় যে কোনো গাড়ি নিয়ে বাসস্ট্যান্ড থেকে বের হতেই যানজটের কারণে সময় লাগছে ঘণ্টা দেড়েক। অপরদিকে পৌর শহরের বিভিন্ন রাস্তার ওপর ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও সিএনজি যত্রতত্র পার্কিং করায় যানজট যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। দিরাই শহরের যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং নিষেধ থাকলেও তা মানছেন না কেউই। সড়কে সারিসারি যানবাহন পার্কিং করে সড়কগুলো যেন সংর্কীণ হয়ে পড়েছে। মহাসড়ক থেকে শুরু করে প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এসব অবৈধ পার্কিং। এছাড়া বাসস্ট্যান্ড পাড়ি দিয়েই চলাচল করতে হয় দিরাই সরকারি কলেজ, দিরাই জামেয়া মাদ্রাসা ও উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা জানান, অনেক সময় যানজটে পড়ে ক্লাস আর করা হয় না। দিরাই পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে বাসস্ট্যান্ডটি সরিয়ে অন্যত্র নেওয়া এখন সময়ের দাবি। দ্রুত এই সব যানবাহন অবৈধভাবে পার্কিং বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন এমনটাই প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের। দিরাই ট্রাফিক পুলিশের এএসআই জগলু মিয়া বলেন, দিরাইয়ের প্রধান প্রধান সড়কগুলো পার্কিং মুক্ত রাখতে প্রতিনিয়ত কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ। অবৈধ পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে নির্দিষ্ট গাড়ি পার্কিংয়ের স্থান না থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। লোকাল বাস রাখার যে জায়গা রয়েছে তা অত্যন্ত সীমিত সেখানে বাসগুলোরই জায়গা হয় না। এর মধ্যে লেগুনা সিএনজিও সেখানে রাখা হয় সবমিলিয়ে বাসস্ট্যান্ড এলাকাটিতে হযবরল অবস্থা। এছাড়াও দুরপাল্লার বাস রাখার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় তারা সড়কে গাড়ি পার্কিং করায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের সাথে দফায় দফায় কথা বলেও এর সুরাহা করা সম্ভব হচ্ছে না।
মানবাধিকার কর্মী শাহজাহান সিরাজ বলেন, দিরাই পৌর শহরের চৌমোহনায় বাসস্ট্যান্ড হওয়ায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অসহনীয় যানজট লেগে থাকে। পৌরসভা প্রতিষ্ঠার দুই যুগ অতিবাহিত হলেও শহর থেকে বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তর না হওয়া দুঃখজনক। শহর থেকে বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তর সারা দিরাই বাসীর প্রাণের দাবি। আমরা বিশ্বাস করি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে অচিরেই সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ ব্যাপারে দিরাই পৌরসভার মেয়র বিশ্বজিৎ রায় বিশ্ব বলেন, শহরকে বড় করার লক্ষ্যে এবং যানজট নিরসনে দীর্ঘদিন ধরে আমরা চেষ্টা করছি। বাসস্ট্যান্ডটি পৌর শহরের সীমান্তবর্তী এলাকায় হস্তান্তর করার মতো এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন পৌরসভার পক্ষে সম্ভব নয়। হস্তান্তরের জন্য প্রকল্প তৈরি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে।